পি আর নির্বাচন পদ্ধতি আসলে কি? বাংলাদেশে কেন দরকার।
পি আর নির্বাচন পদ্ধতি। বাংলাদেশে কেন দরকার, কিভাবে কাজ করবে, এবং সম্ভাব্য ফলাফল। সারা বিশ্বের উদাহরণ, ধরোন, বাংলাদেশের বিতর্ক ও বুদ্ধিজীবীদের মতামত সমেত সহজ ভাষায় বিশ্লেষণ জানতে পড়ুন পি আর নির্বাচন বাংলাদেশ।
পেজ সুচিপত্রঃপি আর নির্বাচন পদ্ধতি আসলে কি? বাংলাদেশে কেন দরকার।
- পিআর নির্বাচন কাকে বলেঃ
- পি আর নির্বাচন পদ্ধতি কি ঃ
- পি আর পদ্ধতির নির্বাচন বাংলাদেশে কেন দরকারঃ
- পি আর পদ্ধতি নির্বাচন বিশ্বের কোন কোন দেশে আছে?
- পি আর নির্বাচনের প্রধান ধরন গুলোঃ
- পি আর এর প্রধান সুবিধা (লাভ) ঃ
- পি আর এর প্রধান অসুবিধা (চ্যালেঞ্জ) ঃ
- বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের প্রধান যুক্তি (সংক্ষেপে) ঃ
- বাংলাদেশে পিয়ার নির্বাচন কিভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে_ সম্ভাব্য মডেলঃ
- পি আর গ্রহণ করলে বাংলাদেশের কি লাভ হতে পারেঃ
- লেখকের শেষ কথাঃ
পি আর নির্বাচন পদ্ধতি কি ঃ
পি আর বা অনুপাত ভিত্তিক প্রতিনিধি ব্যবস্থা হল এমন একটি নির্বাচন পদ্ধতি যেখানে
প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা দলের সমর্থিত প্রার্থীরা ভোট পাওয়ার অনুপাতে সংসদে আসন
পায়। সহজভাবে বললে যদি কোন দল মোট ভোটের ৩০% পায়, তবে মোট আসনের প্রায় ৩০% আসন
সেই দলকে বরাদ্দ করা হয় এটাই পি আর এর মূল ধারণা।
পিআর নির্বাচন কাকে বলেঃ
পি আর মানে ভোটের অনুপাতেই পাষাণ বরাদ্দ। সহজভাবে কোন দল মোট ভোটের ৩০% পায়
তাহলে মোট আসন পাবে সেই দল ৩০ টি। এমনভাবে ডিজাইন করা যাতে প্রতিটি ভোটের মূল্য
বজায় থাকে এবং ছোট দলগুলি সুযোগ পাই।
পি আর পদ্ধতির নির্বাচন বাংলাদেশে কেন দরকারঃ
বাংলাদেশে বিদ্যমান নির্বাচনীয় ব্যবস্থা অনেক সময় জনগণের প্রকৃত মতামত পুরোপুরি প্রতিফলিত হয় না। পি আরপদ্ধতি নির্বাচন বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি চালু হলে প্রতিটি দলের ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বন্টন হবে। এতে ছোট দলগুলো ও ন্যায্য সুযোগ পাবে এবং রাজনীতিতে ভারসাম্য তৈরি হবে। এ পদ্ধতি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরো স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক করবে। ফলে বাংলাদেশের জনগণের আস্থা বাড়বে এবং জাতীয় ঐক্য আরো শক্তিশালী হবে।
আরও পরুনঃউপজেলা ভিত্তিক আইটি ট্রেনিং সেন্টার লোকেশন।
পি আর পদ্ধতি নির্বাচন বিশ্বের কোন কোন দেশে আছে?
পি আর পদ্ধতি নির্বাচন বিশ্বের অনেক দেশে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ইউরোপীয় অধিকাংশ
দেশ, নেদারল্যান্, সুইডেন, নরওয়ে, স্পেন, বেলজিয়া্ম, মিশ্র
পদ্ধতি হিসেবে জার্মানির ও নিউজিল্যান্ড জনপ্রিয় উদাহরণ। এটি বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে
প্রচলিত গণতান্ত্রিক নির্বাচন পদ্ধতি একটি।
পি আর নির্বাচনের প্রধান ধরন গুলোঃ
টি আর আসলে একটাই নয়-এটার কয়েকটি প্রধান ভেরিয়েন্ট আছে।
২ মিশ্র সদস্য অনুপাত ভিত্তিক (MMP)
এটি দুই ভোট ব্যবস্থা-এক ভোট স্থানীয় প্রতিনিধির জন্য, আরেকটি পার্টি
তালিকার জন্য। পরে তালিকার আসনগুলো কন্ট্রাস্ট করে মোট আসনকে ভোট অনুপাতে সমন্বয়
করা হয়।
৩ এডিশনাল মেম্বার সিস্টেম (AmS)
MMP-এর মতই তবে প্রয়োগের ভেরিয়েন্ট আলাদা; স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ইত্যাদি জায়গায় ব্যবহৃত হয়।
পি আর এর প্রধান সুবিধা (লাভ) ঃ
১ নির্বাচনী ন্যায়িতা বাড়ায়ঃ ভোটের সঙ্গে আসনের অনুপাত মেলে; ছোট দল ও
সংখ্যালঘুদের কণ্ঠস্বর বাড়ে।
২ বিচিত্র রাজনৈতিক দৃশ্যপট সৃষ্টি করেঃ
* একদলীয় দখল কমে।; বহুদলীয়তা ও বৈচিত্র বাড়ে।
* বর্জ্য ভোট কমে;FPTP-র মদ একক জয়ী প্রেক্ষিতে' বাজে' বা বর্জ্য ভোট অনেকটা কমে।
৩ গেরিমেন্ডারিং-এর নেতিবাচক প্রভাব কমায়ঃ
আসন বরাদ্দ ভৌগোলিক সীমানার বদলে ভোট অনুপাতে হওয়ায় অঞ্চল ভিত্তিক কৌশলবাদী
কমে।
পি আর এর প্রধান অসুবিধা (চ্যালেঞ্জ) ঃ
১ কাউন্সেলিং/জটিলতাঃ
অনুপাত ভিত্তিক ব্যবস্থায় প্রায় কুন্ঠনা দেখা যায়-/বহু দল মিলে সফট কঠোর জোট সরকারের সৃষ্টি করে, ১০০ আসন শক্তি দুর্বল হতে পারে।
২ তাই-নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হওয়াঃ
স্থানীয় ভোটার ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক কিছুটা দুর্বল হতে
পারে-কারণ অনেক আসুন পার্টি তালিকা থেকে সরবরাহিত। সরকারি জবাবদিহিতা নিয়ে
সন্দেহ থাকতে পারে।
৩ পার্টি-পাশাপাশি নেতৃস্থানীয় মনোনয়ন প্রভাবঃ
বন্ধ তালিকা ক্ষেত্রে পার্টি কেন্দ্রিক মনোনয়ন শক্তি বাড়ে; আমলে দলের
অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা জরুরি।
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের প্রধান যুক্তি (সংক্ষেপে) ঃ
১ সমর্থনকারীর যুক্তিঃ
বহুদলীয় কণ্ঠস্বর নিশ্চিত হবেঃ বড় বড় দলগুলোর একলাভি আধিপত্য কমে ছোট দল,
অঞ্চল ভিত্তিক দল ও যুব সমাজের কন্ঠ বাড়বে।
নির্বাচনীয় সহিংসতা ও বিতর্ক কমতে পারেঃ অনুপাত ভিত্তিক সিস্টেম ভোটের গুরুত্ব
বাড়ায় এবং সব ধসের রাজনীতি নরম হয়।
২ বিরোধী দলীয়/সতর্কসূচক যুক্তিঃ
স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব দুর্বল হতে পারেঃ গ্রাম উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে যে সরাসরি
সম্পর্ক থাকে-তা খর্ব হতে পারে; স্থানীয় দাবী দেওয়ার জন্য ব্যাক্তি প্রতিনিধির
গুরুত্ব কমে যেতে পারে।
৩ পার্টি নেতাদের কর্তৃত্ব বাড়তে পারেঃ বিশেষত বন্ধ তালিকার ক্ষেত্রে পার্টি
নেতৃত্ব তালিকায় উচ্চস্থানে কাকে রাখবে, সেটাই মূল নিয়ন্ত্রণ হবে।
বাংলাদেশে পিয়ার নির্বাচন কিভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে_ সম্ভাব্য মডেলঃ
১ মিশ্র পদ্ধতিঃ
স্থানীয় শাসন গুলো রাখা হবে পাশাপাশি জাতীয:/জেলা তরে পার্টি লিস্ট থেকে
প্রযোজ্য আসন দেওয়া হবে যাতে মোট আসন ভোট অনুপাতে সামঞ্জস্য থাঃ/। এভাবে
স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং জাতীয় পর্যায়ে ও নিশ্চিত হবে। জার্মানি ও
নিউজিল্যান্ডে এ ধরনের সাফল্যমন্ডিত উদাহরণ আ...।
২ বহুভুজী তালিকা:
ভোটাররা পার্টির তালিকার সঙ্গে নির্দিষ্ট প্রার্থীকেও ভোট দিতে পারবেন, ফলে
স্থানীয় জনপ্রিয় ব্যক্তির ও সুযোগ থাকবে এবং-পার্টি নির্ধারণ কম একেবারে
শক্তিশালী হবে।
৩ আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে ধাপে ধাপে রূপান্তরঃ
প্রথম পর্যায়ে কানন নির্বাচন ও নির্বাচনী বিধান সংশোধন, পরে জাতীয় পদ্ধতিতে
পদ্ধতি; সাবেক গবেষণা পেপারগুলো এরকম ধাপে রূপান্তর প্রস্তাব করে।
পি আর গ্রহণ করলে বাংলাদেশের কি লাভ হতে পারেঃ
ধারণাগতভাবে-ভোটারদের প্রতিটি ভোটের মূল্য বাড়বে-বর্জ্য ভোট কম।
রাজনৈতিক বহুমাত্রিকতা-স্থানীয় শারীরিকভাবে ছোট দল ও নতুন নীতি ধারাগুলো সুযোগ
পাবে। গভর্নেন্স চ্যালেঞ্জ-োট সভার মাধ্যমে নীতিগত সমঝোতা প্রয়োজন হবে-এটি কখনো
কখনো নীতিগত স্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে, আবার কখনো জটিলতাও বাড়াতে পারে।
আরও জানুনঃহালাল ভাবে হাজার হাজার টাকা ইনকাম ঘরে বসে।
লেখকের শেষ কথাঃ
পি আর নিয়ে বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া আগে স্বচ্ছ, বহু পাকক্ষেপ ও তথ্যভিত্তিক কাজ প্রয়োজন। কোন একক দেশের মডেল-কপি পেস্ট করা যায় না-বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, সামাজিক গঠন এবং ভৌগোলিক বৈচিত্র্য মাথায় রেখে মিশ্র মডেল( MMP/AMS) সবচেয়ে বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রয়োগের আগে পাইলট প্রকল্প, জাতীয় সংলাপ, আইন সংশোধন এবং ব্যাপক জনসচেতনামূলক কর্মসূচি অপরিহার্য।