সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ করে ফ্রি ইনকাম।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে মানুষের জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অপারেশন। আগে যেখানে ফেসবুক, ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রাম কেবলমাত্র বিনোদনের মাধ্যম ছিল, এখন এগুলো হয়ে উঠেছে আয়ের অন্যতম সেরা উৎসব। শুধু মোবাইল আর ইন্টারনেট থাকলে আপনি ঘরে বসেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ফ্রি ইনকাম করতে পারেন। অনেকেই হয়তো এখনো বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে করেন, কিন্তু বাস্তবে হাজার হাজার তরুণ তরুণী , ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ প্রতিদিন এই মাধ্যম ব্যবহার করে টাকা আয় করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ
সোশ্যাল মিডিয়ার বিশেষ সুবিধা হল এখানে শুরু করার জন্য কোন ইনভেস্ট লাগেনা। কেবল একটা স্মার্টফোন ইন্টারনেট আর নিজের সৃজনশীলতা থাকলে যথেষ্ট। আপনার তৈরি কন্টেন্ট যত মানুষ দেখবে বা শেয়ার করবে, তত আপনার সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের উপায় বাড়তে থাকে। এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া এখন লাখো মানুষের জন্য স্বপ্ন পূরণের পথ হয়ে উঠেছে।

অনেকেই ভাবে যে সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে আয় করা কেবল বিখ্যাত কিছু মানুষ বা সেলিব্রিটিদের কাজ। কিন্তু আসলে বিষয়টি পুরোপুরি ভুল। একজন সাধারন মানুষও আজকে থেকে শুরু করলে ধীরে ধীরে সফল হতে পারে। শুরুতে হয়তো আমায় হবে না, হয়তো ফলোয়ার কম থাকবে হয়তো ভিডিওতে তেমন ভিউ আসবে ন্‌ কিন্তু ধৈর্য ধরে চালিয়ে গেলে এক সময় সেই কন্টেন্টাই লাখো মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে। অনেক ইউটিউবার বা ফেসবুক ক্রিয়েটর আছেন যারা শূন্য থেকে শুরু করেছেন, এখন তাদের মাসিক আয় লাখ টাকায় পৌঁছেছে। মূল বিষয় হলো বিশ্বাস রাখা এবং ধারাবাহিকভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া।

পোস্ট সূচিপত্রঃ সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ করে ফ্রি ইনকাম।

ফেসবুক দিয়ে ইনকামঃ

ফেসবুক বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোশ্যাল মিডিয়া। এখানে কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন সক্রিয় থাকে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনি চাইলে আপনার প্রতিভাকে আয়ের পথে রূপ দিতে পারেন যেমন ধরুন, আপনি রান্না ভাল পারে, তাহলে নিজের রান্নার ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করতে পারেন। শুরুতে বন্ধুবান্ধব দেখবে, ধীরে ধীরে অন্যরা আসব, এবং যদি কন্টেন্ট ভাল হয় তবে সেটি ছড়িয়ে পড়বে অনেকদূর পর্যন্ত। যখন আপনার পেজে নিয়মিত ভিডিও আসে এবং ভিউ বাড়তে থাকে তখন ফেসবুক আপনাকে ইনকামের সুযোগ দেবে। আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে, আর সেই বিজ্ঞাপন থেকে আপনি আয় করবেন। শুধু তাই নয়, ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে আপনি কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কমিউনিটি বানাতে পারে। সেই গ্রুপে মানুষকে জড়ো করে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস শেয়ার করলে সেখান থেকেও আয় সম্ভব।

ইউটিউব থেকে ফ্রি ইনকামঃ

ইউটিউবের কথা আলাদা করে বলতে হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম হল ইউটিউব। এখানে ভিডিও আপলোড করার জন্য কোন টাকা লাগে না, বরং ভিডিও যত মানুষ দেখব, আপনার আয় তত বাড়বে। ইউটিউবে আজ শুরু করতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয় যেমন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম। শোনার পর হয়তো মনে হচ্ছে খুব কঠিন, কিন্তু আসলে ধারাবাহিকভাবে কাজ করলে এটা একদমই সম্ভব।
সোশ্যাল.মিডিয়.ইউজ.করে
অনেক মানুষ প্রথমে ছোট ছোট ভিডিও বানায়, যেমন দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞত, টেকনোলজি রিভি, ব্লগ বা বিনোদনমূলক কন্টেন্ট। ধীরে ধীরে দর্শক সংখ্যা বাড়ে আর একসময় ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যোগ দিয়ে বিজ্ঞাপন থেকে আয় শুরু হয়। ইউটিউবে শুধু বিজ্ঞাপন নয় আরো অনেকভাবে আয় করা যায় যেমন লাইভে গিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে ডোনেশন পাওয়া, স্পন্সর শিপ নেওয়া বা কোন পণ্য রিভিউ করে দেওয়া।

ইনস্টাগ্রাম দিয়ে ইনকামঃ 

ইনস্টাগ্রাম এখন তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। এখানে ছবি আর ছোট ভিডিও এর মাধ্যমে মানুষ নিজের জীবনধারা তুলে ধরে।। অনেক ব্র্যান্ড তাদের পণ্য প্রচারের জন্য ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। যদি আপনার ফলোয়ার সংখ্যা বেশি হয় তাহলে সেই ব্র্যান্ডগুলো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে তাদের পণ্য প্রচারের জন্য এটিকে বলা হয় ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটে। একজন ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার এক একটি কনসার্ট পোস্ট থেকে কয়েকশ ডলার আয় করতে পারেন। এছাড়া নিজের তৈরি করা পণ্য কোনো একিলিয়েট লিংক দিয়ে আয় করা সম্ভব।

টিকটক এর মাধ্যমে আয় করাঃ

টেক টক ও আয়ের বড় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছোট ভিডিও বানিয়ে লাখ লাখ ভিউ পাওয়া যায় এখানে। ঠিকঠাক জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এর অ্যালগরিদম যা নতুন ব্যবহারকারীকে সহজে হায়রালাতে সাহায্য করে। যদি আপনার ভিডিও ভাইরাল হয় তাহলে খুব দ্রুত ফলোয়ার বাড়বে ফলোয়ার বেশি হলে ব্র্যান্ড কলাবরেশন থেকে শুরু করে লাইভ গিফটিং পর্যন্ত নানা মধ্যেমে আয় করা যায়।

প্রফেশনাল প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে ইনকামঃ

শুধু বিনোদনমূলক প্ল্যাটফর্ম নয়, প্রফেশনাল প্ল্যাটফর্ম থেকে ইনকাম সম্ভব। লিংক ড্রয়িং একটি প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক যেখানে আপনি নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করতে হবে এখানে ক্লায়েন্ট খুঁজে প্ল্যানসিং কাজ পাওয়া যায় যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটি্‌ গ্রাফিক্স ডিজাইন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মত কাজের চাহিদা প্রচুর। নিজের প্রোফাইল সাজে সেখানে নিয়মিত পেশাগত কন্টেন শেয়ার করলে সহজে আকৃষ্ট হয় আর সেখান থেকে উপার্জন করতে।

পিন্টারেস্ট দিয়ে ইনকামঃ

পিন্টারেস্ট একটি ভিজুয়াল প্ল্যাটফর্ম যেখানে মানুষ বিভিন্ন ছবি দেখে অনুপ্রাণিত হয়। অনেকেই জানেনা এখান থেকেও ভালো ইনকাম করা যায় ধরুন আপনার একটি ব্লগ আছে সেখানে স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল আছে তাহলে সেই আর্টিকেল থেকে ছবির পোস্টার তৈরি করে পিন্টারেস্টে আপলোড করলে প্রচুর ভিজিটর আপনার ব্লগে আসবে। ব্লগে বিজ্ঞাপন থাকলে সেখান থেকেও আয় হবে। এছাড়া অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে পিন্টারেস্ট একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।

তবে সব কিছুর আগে জানা দরকার সোশ্যাল মিডিয়ায় সফল হতে হলে আপনি অবশ্যই সৃজনশীল হতে হবে। শুধুমাত্র অন্যকে নকল করে এখানে টিকে থাকা যায় না মানুষ নতুন কিছু দেখতে চাই শিখতে চাই বিনোদন দিতে চাই। তাই আপনার কন্টেন হতে হবে উনি মানসম্মান মত আকর্। পাশাপাশি ধৈর্য ধরে নিয়মিত কাজ হবে অনেক সময় দেখা যায় মানুষ কয়েকদিন চেষ্টা করে ফলাবে হতাশ হয়ে পড়ে কিন্তু আসল সাফল্য আসে ধৈর্যের সময়।



সোশ্যাল মিডিয়ায় আরেকটি বড় সুবিধা হল এটি আপনাকে স্বাধীনতা দেয়। এখানে আপনার কোন বস নেই নির্দিষ্ট সময় নেই আপনি নিজের মতো করে কাজ করতে পারবেন। কেউ হয়তো রাতে ভিডিও বানাই কেউ সকালে পোস্ট দেয় আবার কেউ হয়তো সপ্তাহে দুই তিন দিন সময় দেয়। আপনি নিজের সময় ঠিক করে কাজ চালিয়ে যেতে পারে তবে এটিকে যদি আপনি সিরিয়াসলি নেন তবে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা দরকার
ফ্রি ইনকাম।

যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দর্শকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা। ওনার কন্টেন্ট যারা কমেন্ট করে বাস শেয়ার করে তাদের উত্তর দাও তাদের সঙ্গে কথা বলা এসব জিনিস দর্শককে আরো বেশি আপনাকে ভালবাসতে সাহায্য করে। এক সময় এর সম্পর্ক আপনার ব্র্যান্ডকে বড় করে তুলবে।

আজকের দিনে শ্মশান মিডিয়া হয়ে উঠেছে নতুন প্রজন্মের জন্য স্বপ্নের পথ। হাজার তরুণ তরুণ ছাত্র-ছাত্রী এই পথ বেছে নিয়ে সফল সফল হচ্ছেন। কেউ ইউটিউবে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে উঠেছেন কেউ ফেসবুক পেজ চালায় ব্যবসা করছেন, কেউ টিকটক এর মাধ্যমে মার্কেটিং করছেন।

আপনি যদি এখন দ্বিধায় থাকেন, তোরা তবে ভাবো একবার কেবল একটি মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট আর কিছুটা সময় দিয়ে আপনি নিজের স্বপ্নকে পূরণ করতে পারেন শুধু প্রয়োজন সঠিক দিক নির্দেশনা মনোযোগ পরিশ্রম। সোশ্যাল মিডিয়ায় আয় করা কোন স্বপ্ন নয়, বরং একেবারেই বাস্তব। তাই আজ শুরু করুন ছোট ছোট পদক্ষেপ নিন ধীরে ধীরে শিখুন। একদিন আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট হয়ে উঠতে পারে আপনার আয়ের প্রধান উৎস এবং জীবনের মোড় ভরিয়ে দেওয়ার স্বপন।

টুইটার থেকে ফ্রি ইনকামঃ

টুইটার বর্তমানে শুধু খবর বা মতামত শেয়ার এর মাধ্যমে বরং আয়ের ও একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছে। আপনি চাইলে আপনি চাইলে টুইটারে নিজের প্রাণ তৈরি করে পোস্টের মাধ্যমে ফ্রি ইনকাম করতে পারবেন। যদি আপনার ফলোয়ার সংখ্যা বেশি হয় এবং নিয়মিত আকর্ষণীয় টুইট করেন তবে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রোড াক্ট প্রচারের জন্য আপনাকে টাকা দেবে। এছাড়া টুইটারের প্রিমিয়াম কনটেন্ট শেয়ার করে ইনকাম করা যায়। তাই টুইটার এখন ফেসবুক ইউটিউব এর মত একটি সম্ভাবনাময় ফ্রি ইনকাম  প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সফল হওয়ার শর্তঃ

ভালো কনটেন্ট তৈরি করা
নিয়মিত পোস্ট করো
আকর্ষণের টাইটেল ও থাম্বেল ব্যবহার
বাস্তব সৃজনশী আইডিয়া উপস্থাপন করা

সম্ভাব্য ইনকামঃ

ফেসবুক পেজ-মাসে ১০০-৫০০ ডলার পর্যন্ত
ইউটিউব চ্যানেল-মাসে ৫০০-৫০০০ ডলার ইনকাম হতে পারে
ইনস্টাগ্রাম-মাসে ৫০-১০০০ ডলার পর্যন্ত
টিক টক-মাসে২০০-২০০০ ডলার 

শেষ কথা । চ্যালেঞ্জ ও সমাধানঃ

সমস্যাঃ ফলোয়ার বাড়ানো কঠিন
সমাধান-রেগুলার ও ইউনিক কন্টেন্ট দিন
সমস্যাঃ ইনকাম আসতে সময় লাগে
সমাধান-ধৈর্য ধরুন একাধিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করুন
সমস্যাঃ নেগেটিভ কমেন্ট
সমাধান-ইগনোর করুন এবং পজিটিভ দিকে ফোকাস করুন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন